ডায়বেটিস একটি নীরব ঘাতক রোগ। যতই দিন যাচ্ছে এ রোগটি মহামারী আকার ধারণ করছে। এই মরণঘাতী রোগ ডায়াবেটিসে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ২৯০ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত। যার প্রায় ৭০-০৫ ভাগ
মানুষের বসবাস নিম্ন ও দরিদ্র দেশগুলোতে। আগামী ১০ বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে। অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস শুধু বৃদ্ধ মানুষেরই হয়ে থাকে। বর্তমানে কিন্তু এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। বর্তমানে অনেক তরুণরাও এই নিরব মরণঘাতী রোগ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। কারন, এখনকার তরুণরা খুব বেশি পরিমাণ কায়িক পরিশ্রম করতে চায় না তাছাড়া তারা ব্যায়াম করাও অনেকটা ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু ভুলে গিয়েছে। যার ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন। পরিবর্তিত হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। এরই সাথে যুক্ত হয়েছে আবার ঘরে বসে মোবাইল কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফেসনুক, ইউটিউবের ব্যবহার আর কমে গেছে খেলা ধুলা করার মাঠ। বিশেষ করে যারা শহরে জীবনযাপন করছে তারা দিনকে দিন আরো বেশি অলস হয়ে যাচ্ছে, কোথাও যাওয়ার দরকার হলেই রিকশা গাড়ির ব্যবহার, ভবনগুলোতে চলন্ত সিড়ি,লিফটের ব্যবহার। সব মিলিয়েই যেন মানুষের শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বাঁধছে। ডায়াবেটিস এমন একটা রোগ যা থেকে কখনো কোনো মানুষই সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয় না কিন্তু কিছু স্বাস্থবিধি বা নিয়ম কানুন মেনে চললেই কন্ট্রোলে রাখা সম্ভব ডস্যবেটিস।
শরীরে কাঙ্খিত পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন না হওয়ার কারনে রক্তের মধ্যে শর্করার পরিমান বেড়ে যাওয়া কিংবা প্রসাবের সাথে তা বের হয়ে যাওয়াই হল ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র। এই রোগটি পরিবেশগত কারণে কিংবা খাদ্য অভ্যাস জনিত কারণে অথবা বংশগত কারণেও হতে পারে।
ডায়বেটিসের শ্রেনীবিভাগঃ
ডায়বেটিস মূলত দুই প্রকার। এক. টাইপ - ১ ডায়াবেটিস। দুই. টাইপ - ২ ডায়বেটিস।
১. টাইপ-১ ডায়বেটিসঃ ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীর শরীরে যদি ইনসুলিন উৎপন্ন না হয় তাহলে সেটাই হলো টাইপ ১ ডায়াবেটিস। যাদের বয়স সাধারণত ৪০ বছরের কম, তাদেরই এই টাইপ ১ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। নিয়মিত শরীরচর্চা করল, খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আনলে আর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ইনসুলিন নিলে এই টাইপ ১ ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
২. টাইপ ২ ডায়বেটিসঃ কোন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরে আংশিকভাবে ইনসুলিন তৈরি হওয়াই হলো টাইপ ২ ডায়বেটিস। পরিবারের কোন সদস্য যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থেকে, তাহলে তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি হয়ে থাকে, মূলত তাদের শরীরেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা দিয়ে থাকে। যাদের শরী ওজন বেশি থাকে তাদেরই এই টাইপ ২ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে বেশী।
যে কারণে ডায়াবেটিস হয়
যদি কোন ব্যক্তির শরীরে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাহলেই বুঝবেন ধরে নিবেন তার শরীরে ইনসুলিনের অভাব রয়েছে। যার ফলে তার শরীরে শর্করার পরিমাণ হয়তো বৃদ্ধি পেয়েছে অথবা কমে যাচ্ছে মুত্র ত্যাগের মাধ্যমে।
১। ডায়াবেটিস সাধারণত যেকোনো বয়সের মানুষের শরীরে হতে পারে
২। যে সমস্ত ব্যক্তিরা সাধারণত কায়িক পরিশ্রম কম করে তাদের বেশির ভাগ সময় ডায়াবেটিস হয়ে থাকে।
৩। যাদের শরীরের রক্তচাপ বেশি থাকে তাদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত সংখ্যা বেশি।
৪। মানুষের শরীরে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ও ডায়বেটিস হয়ে থাকে।
৫। যাদের রক্তের সাধারণত কোলেস্টরলের মাত্রা বেশি থাকে তাদেরই বেশীরভাগ সময়েই ডায়াবেটিস হয়ে থাকে।
৬। যে সমস্ত ব্যক্তিরা কোন প্রকার ব্যায়াম করে না তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
৭। নিজেদের পরিবার কিংবা আত্মীয়-স্বজনের কারো শরীরে যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের শরীরেও ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে খুবই বেশি পরিমানে।
কিভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কিনাঃ
আপনার শরীরে ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য অসংখ্য লক্ষণ রয়েছে। তবে বেশিরভাগ চিকিৎসকরাই কমন কিছু লক্ষণের বিষয়ে এক মত প্রকাশ করেছেন। এই উপসর্গগুলো যদি কেউ তার