পদ্মা সেতুতে কত টাকা দুর্নীতি হয়েছে ?
পদ্মা সেতুর দুর্নীতি
সেতু তো না যেন একটা সাদা জলহস্তি। জনগণের করের টাকায় ইচ্ছেমতো অপচয়। বারবার আনা হয়েছে নকশায় পরিবর্তন। সেই সাথে জিনিসপত্র মূল্যবৃদ্ধির উছিলায় বছর বছর পকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। সেতুটি নির্মানের সময় উভয় দিক মিলিয়ে প্রায় 20 জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে আর আহতের সংখ্যা 600 ছাড়িয়েছে। এই তথ্য হলো প্রকাশিত। আর অপ্রকাশিত মৃত্যুর সংখ্যা আরো ভয়ঙ্কর আকার ধারন করতে পারে। এটা যেন তেন কোন সেতু নয়। এটি রক্ত, ঘাম আর চোখের জলে নির্মিত একটি সেতু। সেতুর টেস্টিং রেজাল্টের সময় দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এই একটি ব্রিজের কারণে জীব বৈচিত্রের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভুমি অধিগ্রহনের নামে বসত ভিটা ছাড়া হয়েছে শত শত পরিবার। সরকার তাদের নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা পেতে এই জল হস্তি নামক সেতুটি বানিয়েছ
আমাদের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News এ Follow করুন।
হংকং ঝুহাই মাকাও সেতু, চীন
বলছিলাম হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতুর কথা। এই সেতু নির্মানের শুরু থেকেই প্রচুর আলোচনা সমালোচনা ছিল। যতই সমালোচনা থাকুক চীন সরকার সেই সেতু বানিয়েই ছেড়েছে। আর সেই সেতু দিয়ে এখন মানুষ পারাপার হচ্ছে।
আমরাও একটি সেতু নির্মান করেছি। উত্তাল পদ্মার বুকে এঁকেছি একটি সঙ্গিন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আজ আলো দেখিয়েছে প্রায় ২১ টি জেলার তিন কোটি মানুষকে।
এই সেতু নিয়েও হয়েছে অনেক আলোচনা-সমালোচনা। দেশে বিদেশে হয়েছে অনেক ষড়যন্ত্র। তবে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই হয়েছে বেশি। কিন্তু যতই সমালোচনা, ষড়যন্ত্র ছিল না কেন আমাদের পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। ২১টি জেলার তিন কোটি মানুষের জীবনে এসেছে নতুন এক সম্ভাবনা। খুলেছে স্বপ্নের নতুন দুয়ার।
আপনি হয়তো পদ্মা সেতুর মত এই মেগা প্রজেক্টের সমালোচনা করতেই পারবেন। বিভিন্ন অজুহাত, যুক্তি, দলিল দিয়ে দেখাতে পারবেন এই সেতু বানাতে গিয়ে আমাদের কত টাকা অপচয় হলো, আমাদের কি কি ক্ষতি হলো এটা না বানিয়ে আমরা আর কি কি করতে পারতাম ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু আপনি কোন যুক্তিতেই এটা অস্বীকার করতে পারবেন না যে, এই সেতু আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে কতটা সম্ভাবনাময় ভূমিকা রাখবে। নদী পারাপারের আশায় কত ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হত। এই সেতু নির্মানের বদৌলতে দুই পাড়ের মানুষের কত অহেতুক কষ্ট আর ভোগান্তি কমে গেছে তা আপনি কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবেন না।
আর যদি আপনি অস্বীকার করেনও তার পরেও মনে রাখবেন আপনার অস্বীকার করার পরেও এই সেতু ঠিকই তার কাজ করে যাবে ইনশাআল্লাহ।
পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব
এই সেতু নিয়ে শুধু যে সমালোচনা হয়েছে তা কিন্তু নয়. জন্ম দিয়েছে অনেক গল্পের, বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে এই সেতু নিয়ে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক গুজব ছিল এই সেতুর জন্য নাকি মাথা লাগবে। অবাক করার ব্যাপার। এটাও মানুষ এই সময়ে এসে এটাও আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। কতটা বিকৃতি হয়েছে আমাদের মানসিকতার।
পদ্মা সেতু নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই সেতুতে আমরা দেখেছি কিছু কিছু অতি উৎসাহী তরুন প্রজন্ম এসে টিকটক করছে। কিছু আলেমেরা এই সেতুতে নামায আদায় করছে। কিছু তালবে এলেমরা কোরআন খতম করছে। আবার আমরা এও দেখেছি পদ্মা সেতুতে প্রস্রাব করছে, বমি করছে, সেতুর নাট খুলে টিকটক করছে, কেউবা সেতুতে বসে সিগারেট খাচ্ছে। আবার এক দম্পত্তিকে দেখেছি সেতুতে কেক কেটে বিবাহ বার্ষিকী পালন করছে। কত জনের কত আবেগ এই সেতুকে ঘিরে।
সেতু কে ঘিরে অনেক গল্পের মধ্যে একটি গল্প সব থেকে বেশি ভাল লেহেছে। আর তা হল এক যুবক যুবতী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে তারা বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। এই সেতু বিড়ম্বনার জন্য আটকে ছিল তাদের বিয়ে। ইসলামে বিয়ে একটি পবিত্র কাজ। অবশেষে তাদের বিয়ে হলো এই সেতু উদ্ভোদনের দিনে ২৫শে জুন ২০২২ এ।

পদ্মা সেতু ঘিরে অনেকেই নিজের সন্তানের নামের সাথে জুড়ে দিয়েছেন পদ্মা সেতুর নাম। এই যেমন সেদিন একজনের সদ্য জন্ম নেয়া তিন জন যমজ সন্তানের নাম রাখলেন স্বপ্ন পদ্মা সেতু। এর দুদিন আরেক মহিলা চারজন যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন। তারাও পদ্মা সেতুর সাথে মিল রেখে নাম রাখলেন স্বপ্ন, পদ্মা, সেতু, উদ্ভোদন। এই সংবাদ কারো কাছে সুখের আবার কারো কাছে হাসির। এমনই মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে এই সেতু।
রাস্তা, সেতু নির্মান করার উপকারিতা
মানুষের জন্য রাস্তাঘাট বানানো ব্রিজ নির্মাণ করা অনেক পুণ্যের কাজ সওয়াবের কাজ। যতদিন পর্যন্ত এই রাস্তা কিংবা ব্রিজ দিয়ে মানুষ, পশুপাখি, জীবজন্তু চলাচল করবে ততদিন পর্যন্ত নির্মাতার আমলনামায় সওয়াব পৌঁছাতে থাকবে। আর তাই যে কোন নদী পথে বা গাড়িতে সেতুতে ওঠার আগে একটি দোয়া আছে। আপনারা যারা এই পদ্মা সেতু বা যেকোনো সেতুতে উঠবেন তখনই এই দোয়াটি পড়ে নিবেন
আমাদের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News এ Follow করুন।
পদ্মা সেতুতে ওঠার দোয়াঃ যেকোন ওঠার পরে স্থির হয়ে বসে আলহামদুলিল্লাহ বলে তারপর নিচের দোয়াটি পাঠ করবেন।
বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়া মুরসাহা ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম
বাংলা অর্থঃ "আল্লাহর নামে এর গতি ও স্থিতি। আমার পালনকর্তা ক্ষমতায়ন ও মেহেরবান।"
শেষকথা,
আপনারা সবাই নদ্যিপথে কিংবা সড়কপথে চলাচল করার সময় এবং সেতুতে ওঠার সময় এই দোয়া পাঠ করবেন। সকলের জন্ম শুভ কামনা রইলো। আল্লাহ হাফেয।